সাতকানিয়ায় দুই যুবলীগ সন্ত্রাসীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের হরিণতোয়া গ্রামের পূর্ব প্রান্তের সরকারী পাহাড়ে বসবাসকারী যুবলীগের দুইজন সন্ত্রাসীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে।
উপজেলার আমিলাইষ ইউনিয়নের খোদার হাট এলাকার নুরুল আমিন সওদাগর বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় তিনজনকে বিবাদী করে ১২ আগস্ট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাতে তিনি তাঁর মেয়ের জামাই বেলাল হোসেন, বেলালের সহযোগী মিজবাহ এবং বোনের জামাই আব্দুল আলিমকে বিবাদী করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে এবং বাদী ও নির্যাতিতার সাথে আলাপ করে জানা যায়, আমিলাইষের নুরুল আমিনের কন্যা শিউলীর সাথে খাগরিয়ার বেলালের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়েতে স্বর্ণ, আসবাব পত্র, উপটৌকন ইত্যাদি প্রদানের পাশাপাশি বরযাত্রী আপ্যায়ন, বিভিন্ন সময় উপহার ও নগদ অর্থ প্রদান, বিদেশ প্রেরণসহ প্রায় বিশ লাখ টাকা খরচ করেন বাদী নুরুল আমিন। এরপরও বরপক্ষ যৌতুকের জন্য শিউলীকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে। থানায় অভিযোগ দেয়া হয়। বরপক্ষ দোষ স্বীকার করে মোসলেখা দিয়ে কনেকে নিয়ে যায়।
বিগত আওয়ামী আমলে তারা হরিণতোয়া চলে আসে। ছদাহা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম জয় এবং পেকুয়া থেকে আসা যুবলীগ ক্যডার মিজবাহর পাল্লায় পড়ে যুবলীগের বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে যায়। কিছুদিন আগে বাপের বাড়ী হতে এক লাখ টাকা এনে না দেয়ায় একটি মোবাইলের অজুহাত তুলে মিজবাহ, বেলাল এবং আব্দুল আলিম শিউলীকে প্রচ্ড মারধর করে। তাই তাকে বাপের বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু সেটা নিয়েও তারা বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
শিউলী বলেন, “আমার স্বামী বেলাল বিভিন্ন খারাপ লোকের পাল্লায় পড়ে খারাপ হয়ে গেছে। তারা তাকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে বার্মাইয়া মেয়ে এনে বিয়ে করানোর লোভ দেখানোর পর হতে আমার উপর অত্যাচার বাড়িয়েছে। তার নিজের ধারণকৃত কিছু ভিডিও দেখিয়ে এখন আমার বদনাম রটাচ্ছে।”
এ বিষয়ে আব্দুল আলিম ও মিজবাহর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এক নম্বর বিবাদী বেলাল হোসেন বলেন, “আমার স্ত্রী পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গেছে। তাকে আনার বহু চেষ্টা করেছি। সে আসেনি। দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে আছি”
তবে বেলালের এই কথা অস্বীকার করে তার স্বশুর নুরুল আমিন বলেন, “আমার মেয়েকে দিয়ে সে প্রায় সময় আমার
কাছ থেকে টাকা নেয়। সম্প্রতি আরো এক লাখ টাকা নিয়ে যেতে মেয়েকে চাপ দেয়। রাজী না হওয়ায় মোবাইলের অজুহাত তুলে আরো ২ সহযোগীসহ ৩০ জুলাই প্রচন্ডভাবে মেরেছে। তাই আমি নিজে আমার বাড়ীতে ৩১ জুলাই শিউলীকে এনে চিকিৎসা করাচ্ছি। ১ আগস্ট তারা ৬ জন আমার বাড়ীতে এসেছিল। শিউলীকে নিয়ে যাবার বিষয়ে একমত হয়। কিন্তু পরে আবার রোহিঙ্গা নারী বিয়ের লোভে বিগড়ে যায়।”
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাহেদুল ইসলাম বলেন, “শিউলীর পিতা নুরুল আমিন এ বিষয়ে একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে তদন্ত পূর্বক সঠিক আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
…