সাতকানিয়ায় প্রতিবাদের মুখে নলুয়ার প্যানেল চেয়ারম্যানকে অব্যাহতি।
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতকানিয়া উপজেলার তিন নম্বর নলুয়া ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমানকে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়ার একদিন পরই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোন্দকার মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মাসে উক্ত ইউনিয়নের ৮ জন মেম্বার যৌথভাবে স্বাক্ষর করে সাতকানিয়া উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বরাবর দরখাস্থের মাধ্যমে যে কোনো একজন মেম্বারকে প্যানেল চেয়ারম্যান তথা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব প্রদানের জন্য আবেদন করে। নবাগত ইউএনও খোন্দকার মাহমুদুল হাসান গত ১২ আগস্ট উক্ত সূত্রের বরাতে উক্ত ইউনিয়নের নাগরিক সেবা ও সাধারণ কার্যক্রম সচল রাখার নিমিত্তে জনস্বার্থে ও জনদুর্ভোগ এড়াতে নাগরিকত্ব সনদপত্র, উত্তরাধিকারী/ওয়ারিশ সনদপত্র, বিভিন্ন প্রত্যয়নপত্র, ট্রেড লাইসেন্স, সামাজিক সালিশি বৈঠক/গ্রাম আদালত সরকারী বিধি মোতাবেক পরিচালনা করা ও অন্যান্য সেবা প্রদানের জন্য আট নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মিজানুর রহমানকে দায়িত্ব প্রদান করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নলুয়াসহ সমগ্র সাতকানিয়ায় তীব্র প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অবিলম্বে তাকে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি প্রদানের জোর দাবী ওঠে। কারণ হিসেবে বলা হয়, মিজান ফ্যাসিবাদের দোসর। সে নলুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মরফলা শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সভাপতি। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে সে নলুয়ার বিপ্লবী জনতাকে হয়রানি করেছে। তার বিচার হওয়া দরকার। তার বেশকিছু প্রশ্নবিদ্ধ দলীয় কর্মকান্ডের প্রমাণ পেশ করে তাকে নিপীড়নকারী ফ্যাসিস্ট দলের ক্যাডার হিসেবে প্রচার করা হয়। অবশেষে ১৪ আগস্ট তাকে উক্ত দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দেয়া হলো। তার অব্যাহতির খবরে উচ্ছাশ প্রকাশ করেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের লোকজন।
নলুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহাদাত হোসাইন বলেন, মিজানের মত একজন সন্ত্রাসীকে দায়িত্ব দেয়ায় আমরা মানসিকভাবে আহত হয়েছিলাম। আন্দোলন শুরু করেছিলাম। অব্যাহতি দেয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ। তবে নবাগত ইউএনওকে কেউ মিসগাইড করছে কি না তাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অব্যাহতি প্রদান করে জারীকৃত অফিস আদেশের কপি নিজের টাইমলাইনে পোস্ট করে সাতকানিয়া প্রেসক্লাবের আহবায়ক সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম বাবর লিখেন, "যুবলীগ নেতাকে গ্রাম আদালত পরিচালনা ও অন্যান্য সেবা সমূহ প্রদানের জন্য দায়িত্ব দেয়ার একদিন পরেই তা বাতিল করলো ইউ এন ও। দায়িত্ব পালনে আরো অনেক বেশি সচেতন থাকার জন্য সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দদেরকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মাহমুদুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল সঠিক তথ্য দাতাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং উপজেলার সকল প্রশাসনিক কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্নের জন্য সবাইকে সঠিক তথ্য প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছেন।