দোহাজারী রেল স্টেশনকে ঘিরে পর্যটনের নবদিগন্ত
চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত দোহাজারী রেল স্টেশন এখন শুধু একটি রেলযোগাযোগ কেন্দ্র নয়, বরং এটি হয়ে উঠছে দেশের পর্যটন খাতের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার। কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের মাধ্যমে এই স্টেশনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়াল গেজ রেললাইন চালু হওয়ায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের কক্সবাজার পৌঁছানো এখন আরও সহজ ও আরামদায়ক হচ্ছে। কিন্তু শুধু কক্সবাজার নয়, দোহাজারী নিজেও হয়ে উঠছে পর্যটকদের জন্য একটি স্টপওভার কেন্দ্র। চন্দনাইশ ও পার্শ্ববর্তী বাঁশখালী, লোহাগাড়া, সাতকানিয়ার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখন রেলপথের ছোঁয়ায় পর্যটকের হাতের নাগালে।
দোহাজারী থেকে স্বল্প দূরত্বেই রয়েছে সাঙ্গু নদী, বাঁশবনের ছায়া, পাহাড়ি ছড়া, ও ঐতিহ্যবাহী হাটবাজার – যেগুলো পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে। এছাড়া পাহাড়ি জনপদের জীবনের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগও এনে দিচ্ছে এই রেল সংযোগ।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, পর্যটনের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় অর্থনীতিতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট, হস্তশিল্প বাজার, গাইড সার্ভিস—সবখানেই কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।
রেল স্টেশনকে কেন্দ্র করে পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তোলা গেলে এটি হবে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম একটি হাব। দোহাজারী রেল স্টেশনকে ঘিরে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটন তথ্য কেন্দ্র, নিরাপদ যাত্রী বিশ্রামাগার, ভ্রমণ সহায়তা বুথ, ও স্থানীয় সংস্কৃতি প্রদর্শন কেন্দ্র গড়ে তুললে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য নতুন মাত্রা যোগ করা সম্ভব।
সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণের দিকটি গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা করলে দোহাজারী স্টেশন একদিন হতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্পট।
লেখা ও ছবি : নবাব উদ্দীন